Header Ads

ডালিম এর উপকারিতা ও ঔষধি গুনাগুন



ছোট বড় সকলের প্রিয় ফল ডালিম। একদিকে এর যেমন আছে আকর্ষণীয় রং ও স্বাদ। তেমনি আছে অবর্ণনীয় পুষ্টি উপাদান ও স্বাস্থ্য উপকারিতা।
ডালিমকে চীনে বলা হয় লাকি ফ্রুট। যার অন্য নাম আনার। পাঞ্জাব কাশ্মীরে এ ফলকে বেদানা বলে। বেদানা আকারে ডালিমের চেয়ে অনেক ছোট এবং মিষ্টি স্বাদের। ডালিমের বৈজ্ঞানিক নাম Punica granatum। এটি স্বাস্থ্য ও ত্বকের জন্যও খুব ভালো। ডালিমে আছে এন্টি অক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বককে সুরক্ষিত রাখে ডালিম। এতে আছে এন্টি অক্সিডেন্ট যা শরীরের যাবতীয় জীবাণুকে অপসারণ করে। ডালিম ফল ডালিমগাছের পাতা, ছাল, মূল, মূলের ছাল সবই ওষুধি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
ডালিমের উপকারিতা: ডালিম ক্ষিদে বাড়িয়ে দেয়, শরীর স্নিগ্ধ করে, মেদ ও বল বৃদ্ধি করে। ডালিম রুচি বৃদ্ধি করে, কোষ্ঠশুদ্ধি করে, অরুচি দূর করে শ্বাসকষ্ট, কাশি ও বাত ব্যাধি নাশ করে। ডালিম খেলে শরীরের একটা বিশেষ ধরনের ফূর্তিভাব বা চেতনার সৃষ্টি হয়। ডালিমের রস মেধা বৃদ্ধি করে, মুখ পরিষ্কার করে। ডালিমে প্রচুর পরিমাণ লৌহ আছে যা রক্তবৃদ্ধি করে। ডালিমের সরবতে সমপরিমাণ পানি মিশিয়ে পান করলে উষ্ণাপত্ত অর্থাৎ পিত্তগরম হওয়া সেরে যায়, গরমকালে মাথা গরম দূর হয়ে যায় মাথা ঠান্ডা হয় ও চোখের জ্বালা কমে যায়। এ সরবত রুচিকারক এবং এর কাছে পিত্তের প্রকোপ শান্ত করার গুণ সমৃদ্ধ।
বহুদিন ধরে যারা আমাশায় ভুগছেন তাদের ডালিমের খোসা লবঙ্গের সঙ্গে ফুটিয়ে খাওয়ালে অন্য ওষুধের চেয়ে অনেক বেশি সুফল লাভ করবেন। ডালিম গাছের মূলের ক্বাথ কৃমিনাশক। ডালিমের রস খেলে জন্ডিস সেরে যায় বুক ধড়ফড়ানিও সারে। বুকের ব্যথা ও কাশি কমে যায়। কণ্ঠস্বর পরিষ্কার হয়। ডালিমের রস বমি বন্ধ করে ও হার্টের পক্ষে উপকারী। ডালিমে শরীর হৃষ্টপুষ্ট হয়, পিপাসা দূর হয়। ডালিমের রস বিটলবণ ও মধু এক সঙ্গে মিশিয়ে মুখে রাখলে বিশ্রি রকমের অরুচি প্রশমিত হয়। ডালিমের রস পুরনো পেটের অসুখে ও জ্বরে উপকার দেয়। ডালিমের রস ত্রিদোষ নাশ করে অর্থাৎ কোমরবাত ও পিত্তের  দোষ নাশ করে। ডালিম ফুল ও ডালিমের খোসা জৈত্রি দারচিনি, ধনে ও গোলমরিচের গুড়ো মিশিয়ে খাওয়ালে বাচ্চাদের পুরানো একটানা পেটের অসুখ ও পায়খানার সঙ্গে রক্তপড়া বন্ধ হয়। মিষ্টি ডালিম মেধা বৃদ্ধি করে, মুখ পরিষ্কার করে, হার্ট ও লিভার সবল করে। প্রতিদিন একটি ডালিম খেলে ১৭ শতাংশ ভিটামিন ‘সি’ শরীরে প্রবেশ করে।
আমরা জানি ভিটামিন ‘সি’ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। একই সঙ্গে ঠাণ্ডা ও কাশির প্রকোপ  থেকে সুরক্ষা দেয়। ডালিমের রস ত্বকে বলিরেখা পড়তে দেয় না ও ত্বকের কোষকে দীর্ঘায়ু করে। এটি কোলাজেন ও অ্যালাস্টিন উৎপাদনেও সাহায্য করে। এই দুটি উপাদানই ত্বককে সজীব ও তরুণ রাখে। ডালিমে আছে এন্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা ত্বকে আরাম  দেয়। আরও আছে ট্রিকোসেনিক এসিড ও ওমেগা ৫ ফ্যাটি এসিড যা শুষ্ক ও রুক্ষ ত্বককে আদ্রতা ফিরিয়ে আনে। ডালিমের রস ক্যান্সারের সেল তৈরি হতে দেয় না। বিশেষ করে মূত্রনালীর ক্যান্সার দমনে এটি বিশেষ ভূমিকা রাখে। যারা ডায়াবেটিসের রোগী তারা অনায়েসে খেতে পারেন ডালিম। কারণ এতে আছে ডায়েট্রি ফাইবার। যা রক্তের শর্করা কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে। ডালিম রক্তের কোলেস্ট্রলের মাত্রা কমিয়ে আনে ও রক্তে এইচডিএল নামের এক প্রকার কোলেস্ট্রল সরবরাহ করে যা উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে স্ট্রোকের সম্ভাবনা কমায়।
এছাড়াও ডালিম ট্যানিন, এনেথোসায়ানিনস ও পলিফেনলসের ভালো উৎস যা আপনার হৃদয়কে রাখে সুস্থ। ডালিম হজম প্রক্রিয়াকে সক্রিয় রাখে বিধায় পেট পরিষ্কার থাকে ও ত্বকে ব্রণ দেখা দেয় না। ডালিম ভিটামিন ‘সি’ যা ত্বকের তেল গ্রন্থিকে নিয়ন্ত্রণ করে। ডালিম ত্বককে হাইড্রেট করে। এক্ষেত্রে এটি গ্রিন টির চাইতেও ভালো। আলজেইমার্সের রোগীদের জন্য এটি খুব ভালো ওষুধ হিসেবে কাজ করে। স্মৃতিশক্তি প্রখর করতেও এর জুড়ি নেই। প্রতিদিন ডালিম খেলে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমান পুষ্টি প্রবেশ করে ও এর মধ্যকার উপাদান শরীরে বাড়তি মেদ জমতে দেয় না। ডালিম বিপাক প্রক্রিয়াকে সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করে। এটি ডায়েরিয়া ও বমির উপদ্রপ কমায়। এছাড়াও এটি পেটের  যেকোনও সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম।
ডালিম রক্তনালীকে সুরক্ষিত রাখে ও প্লেক জমতে  দেয় না। ফলে স্ট্রোকের সম্ভাবনা কমে যায় বহু অংশে। ডালিম মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় ও চুলপড়া কমায়। এটি চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝরঝরে ভাবও এনে  দেয়।

কোন মন্তব্য নেই

কপিরাইট @সময় নিউজ ২৪ -২০১৮ এই সাইটের কোন সংবাদ ও ছবি কপিরাইট করা সম্পূর্ণ বেআইনি . Blogger দ্বারা পরিচালিত.